এবিএনএ : আমরা সবাই জানি, ছোটরা বড়দের দেখেই সবকিছু শেখে। বড়দের অনুকরণ করে, তাদের কথা মেনে চলার চেষ্টা করে। তবে বড়দেরও কিন্তু ছোটদের কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। কারণ আপনি মানুন আর না-ই মানুন, ছোটরা বড়দের চেয়ে অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী, সাহসী। তারা বড়দের চেয়ে জীবন অনেক বেশি উপভোগ করে। তাদের দেখে মাঝেমধ্যে সবার মনেই ইচ্ছে জাগে ছেলেবেলায় ফিরে যেতে। সেটা সম্ভব না হলেও ছোটদের কাছ থেকে আমরা কিছু বিষয় শিখতে পারি।
প্রতিদিন জীবনটা নতুন করে শুরু করা: শিশুদের প্রতিটা দিনই শুরু হয় নতুন উৎসাহের মধ্য দিয়ে। তারা চায় পুরোটা দিন উপভোগ্য করে তুলতে। তাদের কাছে আগামীকাল বলে কিছু নেই। তাদের কাছে মুহূর্তটাই আসল। প্রতিটা দিনই তাদের কাছে নতুন দিন। আর নতুন দিন মানে নতুন বন্ধু তৈরির সম্ভাবনা, নতুন অভিযানের যাওয়ার স্বপ্ন, নতুন কিছু শেখার আগ্রহ। শিশুরা একদিনের ঘটনা অন্যদিন মাথায় রাখে না। প্রতিটা দিন তারা নতুনভাবে শুরু করে।
সৃষ্টিশীল কাজে আনন্দ খুঁজে নেয়া: শিশুরা একই কাজে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ব্যয় করে না। তারা ছবি আঁকে, কখনো মাটি বা খেলনা দিয়ে কিছু বানায় আবার কখনো অন্য কোন সৃষ্টিশীল কাজে নিজেদের ব্যস্ত রাখে। বড় হতে হতে মানুষ সৃষ্টিশীল কাজ থেকে দূরে সরে যায়। একবার চিন্তা করে দেখুন তো, চিত্রশিল্পী ছাড়া কতজন আছেন যারা ছবি আঁকতে বসেন? কিংবা কাদামাটি দিয়ে খেলনা বানান? ছোটরা করে বলে এগুলোই যে আমাদের করতে হবে তা নয়। কিন্তু তাদের কাছ থেকে আমরা সৃষ্টিশীল কাজের উৎসাহ নিতে পারি।
সাহসী হওয়া: শিশুর জীবনের আনন্দ সবসময়ই সীমাহীন। কারণ সে কখনো পরাজয়ে লজ্জ্বা কিংবা ভয় পায় না। তারা জয়ী হওয়ার আশা নিয়েই জীবনে এগিয়ে যায়।পরাজয় কি তা তারা জানে না। জীবন যেমনই হোক না কেন, তা তারা আলিঙ্গন করতে জেনে যায়।
হাসতে থাকা: শিশুরা তাদের চারপাশের সবকিছুতেই আনন্দ খুঁজে নেয়। ছোট ছোট বিষয়েও তাদের হাসি পায়। জগতের সবকিছুই যেন তাদের কাছে হাসির উপাদান হয়ে ধরা দেয়।
বন্ধুত্ব ধরে রাখা: শিশুরা বন্ধুদের সঙ্গে খেলা করতে এবং নতুন নতুন বন্ধু তৈরি করতে সত্যিকার অর্থে পছন্দ করে। তারা স্কুল শুরুর পর বন্ধুদের জন্মদিনের পার্টিতে যায়, খেলার টিমে যোগ দেয়। বড়দের চেয়ে তারা অনেক বেশি সামাজিক।
নতুন কিছু চেষ্টা করা: কোন খেলা না পারলেও শিশুরা সেই খেলা খেলতে ভয় পায় না। অজানা কোন কিছুতে তাদের কোন ভয় নেই। কিন্তু আমরা বড়রা সবসময়ই অজানাকে ভয় পাই। আমরা সবসময় জীবনকে নিরাপদ এবং নিশ্চিত দুরত্ব থেকে দেখতে চাই।
ভুলে যাওয়া এবং ক্ষমা করা: খেলতে খেলতে শিশুদের মধ্যে প্রায়ই মরামারি হয়। কখনো ভাইবোন, কখনো বা বন্ধুদের সঙ্গে। তখন তারা ‘তোমার সঙ্গে আর কখনো খেলব না বা কথা বলব না’, এই অঙ্গীকার করে। কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই সেটা ভুলে যায়। আবার আগের মতোই বন্ধু কিংবা ভাইবোনের সঙ্গে এমনভাবে খেলা শুরু করে যেন কিছুই হয়নি। শিশুদের মধ্যে ভুলে যাওয়া এবং ক্ষমা করার ক্ষমতা আছে বলেই তারা এতটা আনন্দে থাকতে পারে।